Bismillah

Bismillah

শুক্রবার, ২০ মার্চ, ২০১৫

প্রতিরোধ করুন কিডনি রোগ

                                     প্রতিরোধ করুন কিডনি রোগ






হুমায়ুন কবীর হিমু
Aug 21, 2014 10:16 am
একজোড়া কিডনি, একজোড়া ইউরেটার, একটি মূত্রথলি একটি মূত্রনালী নিয়ে রেচনতন্ত্র গঠিত হয়। রেচনতন্ত্রের শরীরের দূষিত পদার্থগুলো দেহ থেকে বের করে দিয়ে দেহকে কলুষমুক্ত করে। কিডনি এর পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
ছাড়া আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে কিডনির। কিডনি বা রেচনতন্ত্রের কোনো রোগ দেখা দিলে জীবন হতে পারে সঙ্কটাপন্ন। কিন্তু কিছু নিয়ম মেনে চললেই কিন্তু এসব রোগ থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়

প্রতিরোধ করুন ইনফেকশন : মূত্রনালীর দৈর্ঘ্য ছোট, যোনি পায়ুপথের খুব কাছাকাছি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল মতাসম্পন্ন পুরুষের মতো প্রোস্টেটিক গ্রন্থির তরল পদার্থ নিঃসরণ না হওয়ায় মেয়েরা খুব সহজেই কিডনি ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশনে আক্রান্ত হয় বেশি। তাই নারীদের বেশি সাবধান হওয়া প্রয়োজন। আর ইনফেকশন প্রতিরোধে নিচের নিয়মগুলো মেনে চলুন

প্রস্রাব ধরে রাখবেন না : কিডনি প্রতিদিন ১৭০ লিটার করে রক্ত পরিশোধন করে। রক্ত পরিশোধনের পর প্রায় . লিটার মূত্র আকারে দেহ থেকে বের হয়ে আসে। নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থগুলো মূত্রের মাধ্যমে দেহের বাইরে চলে আসে। তাই বর্জ্য পদার্থ যত দ্রুত সম্ভব দেহের বাইরে বের করে দেয়া দরকার। অনেকেই আছেন প্রস্রাবের প্রচণ্ড বেগ থাকার পরও প্রস্রাব না করে ধরে রাখেন। এটা কিন্তু কিডনির জন্য তিকর। তাই প্রস্রাব ধরে না রেখে প্রস্রাবের চাপ অনুভব করার সাথে সাথে তা ত্যাগের অভ্যাস করতে হবে। এতে করে কিডনি মূত্রথলি তির হাত থেকে রা পায়

প্রচুর পানি পান করুন : অনেকেরই পানি পানে অনীহা দেখা যায়। এটা কিন্তু কিডনির জন্য তিকর। পানি কিডনি থেকে তিকর পদার্থ ব্যাকটেরিয়াকে ধুয়ে ফেলে কিডনিকে রাখে তরতাজা। ফলে কিডনি, মূত্রথলি বা মূত্রনালীর ইনফেকশনের মাত্রা কমে যায়। আবার পানি বেশি করে পান করলে ছোট আকারের পাথর শরীর থেকে আপনা-আপনি বের হয়ে যেতে সাহায্য করে। তাই কিডনিকে রা করতে প্রচুর পানি পান করুন। প্রতিদিন তিন-চার লিটার বা কমপে দুই লিটার পানি পান করুন। খুব বেশি পানি পান করবেন না। এটা কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য তিকর হতে পারে। আবার অনেক কিডনি রোগীকে চিকিৎসকরা নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে বলেন। সেসব রোগী চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত পানি পান করবেন না

যৌন মিলনের পর প্রস্রাবের অভ্যাস করুন : মেয়েদের মূত্রনালী যোনিপথের খুব কাছেই অবস্থান করে। তাই যৌনমিলনের সময় মহিলাদের মূত্রনালীতে ছোটখাটো ইনজুরি হয়। যোনিপথে মলদ্বারে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া থাকে। ফলে খুব সহজেই মেয়েদের মূত্রনালীতে ব্যাকটেরিয়া ঢুকে পড়ে ইনফেকশন করতে পারে। হতে পারে ইউটিআই। আবার এর সঠিক চিকিৎসা না করালে থেকে হতে পারে কিডনির ইনফেকশন যেটা কিডনিকে অকেজো করে দিতে পারে। কিন্তু যৌন মিলনের পর প্রস্রাব করলে প্রস্রাবের সাথে ব্যাকটেরিয়াগুলো শরীরের বাইরে চলে আসায় রক্ষা পায় কিডনি

মূত্রথলির ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণ করুন : দীর্ঘদিন মূত্রথলি বা মূত্রনালীর ইনফেকশনের চিকিৎসা না করালে তা কিডনি ইনফেকশনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এটা সহজে প্রতিরোধ করা যায়। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, তলপেট ব্যথা, প্রস্রাবের আগে পরে জ্বালাপোড়া, কোমর ব্যথা জ্বর থাকলে বুঝবেন আপনার মূত্রথলি বা মূত্রনালীর ইনফেকশন (ইউটিআই) হয়ে থাকতে পারে। বেশি করে পানি পানের পর যদি সমস্যা দূর না হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শমতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করার প্রয়োজন হতে পারে। তবে কোনোমতেই নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা ঠিক হবে না। আর একটি ব্যাপার হলো
কোমর ব্যথা হলেই অনেকেই মনে করেন কিডনির সমস্যা হয়েছে। তারা চিন্তায় পড়ে যান। কোমর ব্যথা হলেই যে কিডনির সমস্যা হয়েছে এটা ঠিক নয়। কোমব ব্যথার সাথে যদি প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, প্রস্রাবের আগে পরে তলপেটে ব্যথা, ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাবের পর প্রস্রাব ঠিকমতো হয়নি বলে মনে হওয়া, প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া, প্রস্রাব ঠিকমতো ধরে রাখতে না পারা ইত্যাদি নানান সমস্যা দেখা দেয় তাহলে কিডনির সমস্যা হতে পারে

চা-কফি কম পান করুন : কেউ কেউ চা বা কফি পান করেন বেশি করে। এগুলো খুব বেশি পরিমাণে খেলে কিডনির কর্মমতা নষ্ট হতে পারে সেই সাথে বারবার কিডনির ইনফেকশন হতে পারে। তাই চা-কফি পানের পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে পানি বা ফলের জুস পান করুন

অপরিচ্ছন্ন ন্যাপকিন ব্যবহার করবেন না : সাধারণত গ্রাম-গঞ্জে মেয়েরা মাসিকের সময় পরিচ্ছন্ন ন্যাপকিনের পরিবর্তে নোংরা পুরান, ছেঁড়া কাপড়-চোপড় ব্যবহার করেন। এসব নোংরা কাপড় থেকে ব্যাকটেরিয়া খুব সহজেই মূত্রনালী দিয়ে ভেতরে ঢুকে রোগাক্রান্ত হতে পারে। তাই সব সময় পরিচ্ছন্ন ব্যাকটেরিয়ামুক্ত ন্যাপকিন ব্যবহার করুন

পরিষ্কার রাখুন গুপ্তস্থান : পায়ুপথে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া থাকে। এসব ব্যাকটেরিয়া খুব সহজেই মূত্রনালী দিয়ে ভেতরে ঢুকে কিডনির রোগ করতে পারে। তাই গুপ্তস্থান সব সময় পরিষ্কার রাখুন। টয়লেটের পর বেশি করে পানি দিয়ে গুপ্তস্থান পরিষ্কার করুন

প্রতিরোধ করুন কিডনির পাথর : উন্নয়নশীল দেশে মূত্রথলির পাথর আবার উন্নত দেশে কিডনির পাথর হয় বেশি। উত্তর আমেরিকায় এক সমীায় দেখা গেছে, ৭০ বছর বয়সী মানুষের ১২ শতাংশ পুরুষ শতাংশ মহিলার কিডনিতে পাথর হয়েছে। আমাদের দেশেও কিডনিতে পাথর হওয়া লোকসংখ্যা কম নয়। একটু সচেতন হলে কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব

জন্য লিটারের বেশি পানি পান করুন, ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খান এটা প্রস্রাবের অম্লত্ব রা করে কিডনিতে পাথর রা করে। শাকসবজি ফলমূল খান বেশি করে। আমিষজাতীয় খাবার যেমন গোশত খাওয়া কমিয়ে দিন। ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খান বেশি করে। ভিটামিন বি- সমৃদ্ধ কলা, টমেটো, তরমুজ ইত্যাদি খান। কিন্তু শিম, বিট, কাঁচামরিচ, স্পাইন্যাচ, চকলেট, কোকো বীজের গুঁড়া বা ফল, চীনাবাদাম বা এর তেল, লবণ, প্রচুর গোশত, কোমল পানীয় ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিমের কুসুম, কলিজা খাওয়া বাদ দিন। এগুলো কিডনি বা মূত্রথলিতে পাথর হতে সাহায্য করে। 
অনেকেই মনে করেন, ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেলে বুঝি পাথর বেশি হয় এটা একদম ঠিক নয়। সম্প্রতিক হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল ৯০ হাজার মহিলার ওপর জরিপ চালিয়ে দেখতে পেয়েছে যে, যেসব মহিলা বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেয়েছেন তাদের কিডনিতে পাথর হয়নি বললেই চলে। তাই বলে আবার ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাবেন না। কারণ তারা আরো দেখতে পেয়েছেন যে, ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেলে কিডনিতে পাথর হয় দ্রুত

ওষুধ হতে সাবধান : একটু শরীর ব্যথা হলে অনেকেই ফার্মেসি থেকে ব্যথার ট্যাবলেট যেমন ডাইকোফেনাক এনে খান। এটা কিন্তু কিডনির জন্য খুবই মারাত্মক। এটা কিডনিকে অকেজো করার পাশাপাশি নানা ধরনের সমস্যা করতে পারে। ব্যথানাশক ট্যাবলেট, এসিআই ইনহিবিটর যেমন ক্যাপটোপ্রিল, এনারাপ্রিল, লিসিনোপ্রিল ইত্যাদি, কেমোথেরাপি, লেড, পেনিসিলামিন, গোল্ড, লিথিয়ামসহ আরো অনেক ওষুধ আছে যেগুলো কিডনির জন্য তিকর। তাই এসব ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করবেন না

সুত্র: ইন্টারনেট

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রিন্ট পি ডি এফ

Print Friendly Version of this pagePrint Get a PDF version of this webpagePDF
“ডাক তোমার প্রভূর পথে প্রজ্ঞা এবং সদুপদেশের মাধ্যমে এবং তাদের সাথে বিতর্ক কর সর্বত্তোম পন্থায়” (সূরা নাহলঃ১২৫)