আব্দুল্লাহিল হাদী / 22/11/2014
জানাযা বিষয়ে বিভিন্ন ফতোয়া
প্রশ্ন ১ – ব্রেইন স্ট্রোকে মৃত্যুবরণকারীর অঙ্গদানের বিধান কি?
উত্তর – জীবিত হোক আর মৃত হোক প্রতিটি মুসলিম অত্যন্ত সম্মানের অধিকারী। সুতরাং তার সাথে এমন কোন আচরণ করা উচিৎ হবে না, যা তার জন্য কষ্টকর বা তার আকৃতি বিকৃতির শামিল, যেমন হাড় বাঙ্গা বা টুকরো টুকরো করা ইত্যাদি। হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«كسر عظم الميت ككسره حيا »( رواه أبوداود)
“মৃতের হাড় ভাঙ্গা তার জীবিত অবস্থায় হাড় ভাঙ্গার ন্যায়”। (আবুদাউদ) উল্লেখিত হাদিস এ কথার প্রমাণ বহন করে যে, কোন জীবিত ব্যক্তির উপকারার্থে মৃত ব্যক্তির অঙ্গহানি করা, যেমন রিৎপিণ্ড বা কলিজা ইত্যাদি কর্তন করা জায়েয নয়, কারণ এটা হাড় ভাঙ্গা হতেও জঘন্য। মানবাঙ্গ দান করা জায়েয কি না এ বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের যথেষ্ট মতানৈক্য রয়েছে। কতিপয় আলেম বলেছেন বর্তমান সময়ে অঙ্গদানের অধিক প্রয়োজন দেখা দেয়ার কারণে তা বৈধ। কিন্তু তাদের এ উক্তি সঠিক নয়। পূর্বোল্লিখিত হাদিস দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, অঙ্গদান জায়েয নেই এবং এতে যেমন মৃত ব্যক্তির অঙ্গের সাথে খেল-তামাশা করা হয়, অনুরূপ তাকে অপমানও করা হয়।
বাস্তব সত্য হল এই যে, মৃতের ওয়ারিসগণ সম্পদের লোভে মৃতের মানহানীর বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ করে না, তা ছাড়া ওয়ারিসগণ তো শুধু মৃতের মালের ওয়ারিস হয় তার দেহের ওয়ারিস তো কেউ হয় না।
প্রশ্ন ২ – মৃত কাফেরের হাড় বিচ্ছিন্ন করার হুকুম কি?
উত্তর – এ বিষয়টি ব্যাখ্যা সাপেক্ষ, যদি মৃত কাফের জিম্মি অথবা চুক্তিভুক্ত বা নিরাপত্তা কামী হয়, তাহলে তার হাড় বিচ্ছিন্ন করা জায়েয হবে না, কারণ সে মুসলিমদের ন্যায় সম্মানী, আর যদি সে যুদ্ধরত দেশের হয় তাহলে জায়েয হবে।
প্রশ্ন ৩ – প্রতিশোধ বা কিসাস হিসাবে মৃতব্যক্তির হাড্ডি বিচ্ছিন্ন করা কি ওয়াজিব?
উত্তর – ওয়াজিব নয়, কারণ কিসাস তো চলে শর্তসাপক্ষে শুধু জীবিতদের মাঝে।
প্রশ্ন ৪ – মৃতব্যক্তি অঙ্গদানের অসিয়ত করলে তা কি বাস্তবায়ন করা হবে?
উত্তর – পূর্বের ফতোয়ার কারণে তার অসিয়ত বাস্তবায়ন করা হবে না। যদিও সে অসিয়ত করে যায়, কারণ তার দেহের মালিক সে নিজে নয়।
প্রশ্ন ৫ – মৃতের সম্পদ থেকে প্রথমে কাফন ও সংশ্লিষ্ট বিষয় যেমন সুগন্ধি ইত্যাদির খরচ কি আলাদা করা হবে?
উত্তর – মৃতের ত্যাজ্য সম্পদ হতে সর্বপ্রথম কাফন দাফন যেমন লাশের গোসল দেয়া, কবর খনন করা ইত্যাদির খরচ বের করা হবে, অতপর বন্ধকের বিনিময়ে গৃহিত ঋণ পরিশোধ করা হবে, অতঃপর সাধারণ করজ পরিশোধ করা হবে, অতঃপর সম্পদের এক তৃতীয়াংশ হতে ওয়ারিস ব্যতীত অন্যদের জন্য কৃত অসিয়ত পূরণ করা হবে।
প্রশ্ন ৬ – কোন ব্যক্তির যদি ব্রেইন স্ট্রোক হয়, তাহলে তাকে তৎক্ষণাৎ মৃত বলা যাবে?উত্তর – না, তাকে মৃত বলা যাবে না, তাকে মৃত ঘোষণা করার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করবে না, বরং মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। অনেক সময় ডাক্তারগণ রুগির কলিজা ইত্যাদি কেটে নেয়ার জন্য এ বিষয়ে হাড়াহুড়ো করে, এবং মৃতকে নিয়ে যাই ইচ্ছা তাই করতে থাকে এগুলো সম্পুর্ণ না জায়েয।
প্রশ্ন ৭ – ডাক্তারগণ দাবি করেন যে, ব্রেইন স্ট্রোকের মানুষ কখনো জীবন ফিরে পায় না, কথাটি কতটুকু সত্য?
উত্তর – তাদের এ দাবি নির্ভরযোগ্য নয়। আমাদের নিকট এমন অনেক তথ্য আছে যে, ব্রেইন স্ট্রোককৃত মানুষ জীবন ফিরে পেয়েছে এবং দীর্ঘদিন জীবিত ছিল। মূল কথা হচ্ছে ব্রেইন স্ট্রোককৃত ব্যক্তিকে ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত বলা যাবে না, যতক্ষণ না তার মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
প্রশ্ন ৮ – মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকট সূরা ইয়াসিন ব্যতীত অন্য কোন সূরা পড়া জায়েয আছে কি?
উত্তর – যেহেতু হাদিস শরিফে সূরা ইয়াসিন পড়ার কথা এসেছে তাই ঐ সূরা পড়াই উত্তম, কিন্তু তার সাথে অন্য সূরা পড়লেও কোন সমস্যা নেই।
প্রশ্ন ১ – ব্রেইন স্ট্রোকে মৃত্যুবরণকারীর অঙ্গদানের বিধান কি?
উত্তর – জীবিত হোক আর মৃত হোক প্রতিটি মুসলিম অত্যন্ত সম্মানের অধিকারী। সুতরাং তার সাথে এমন কোন আচরণ করা উচিৎ হবে না, যা তার জন্য কষ্টকর বা তার আকৃতি বিকৃতির শামিল, যেমন হাড় বাঙ্গা বা টুকরো টুকরো করা ইত্যাদি। হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«كسر عظم الميت ككسره حيا »( رواه أبوداود)
“মৃতের হাড় ভাঙ্গা তার জীবিত অবস্থায় হাড় ভাঙ্গার ন্যায়”। (আবুদাউদ) উল্লেখিত হাদিস এ কথার প্রমাণ বহন করে যে, কোন জীবিত ব্যক্তির উপকারার্থে মৃত ব্যক্তির অঙ্গহানি করা, যেমন রিৎপিণ্ড বা কলিজা ইত্যাদি কর্তন করা জায়েয নয়, কারণ এটা হাড় ভাঙ্গা হতেও জঘন্য। মানবাঙ্গ দান করা জায়েয কি না এ বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের যথেষ্ট মতানৈক্য রয়েছে। কতিপয় আলেম বলেছেন বর্তমান সময়ে অঙ্গদানের অধিক প্রয়োজন দেখা দেয়ার কারণে তা বৈধ। কিন্তু তাদের এ উক্তি সঠিক নয়। পূর্বোল্লিখিত হাদিস দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, অঙ্গদান জায়েয নেই এবং এতে যেমন মৃত ব্যক্তির অঙ্গের সাথে খেল-তামাশা করা হয়, অনুরূপ তাকে অপমানও করা হয়।
বাস্তব সত্য হল এই যে, মৃতের ওয়ারিসগণ সম্পদের লোভে মৃতের মানহানীর বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ করে না, তা ছাড়া ওয়ারিসগণ তো শুধু মৃতের মালের ওয়ারিস হয় তার দেহের ওয়ারিস তো কেউ হয় না।
প্রশ্ন ২ – মৃত কাফেরের হাড় বিচ্ছিন্ন করার হুকুম কি?
উত্তর – এ বিষয়টি ব্যাখ্যা সাপেক্ষ, যদি মৃত কাফের জিম্মি অথবা চুক্তিভুক্ত বা নিরাপত্তা কামী হয়, তাহলে তার হাড় বিচ্ছিন্ন করা জায়েয হবে না, কারণ সে মুসলিমদের ন্যায় সম্মানী, আর যদি সে যুদ্ধরত দেশের হয় তাহলে জায়েয হবে।
প্রশ্ন ৩ – প্রতিশোধ বা কিসাস হিসাবে মৃতব্যক্তির হাড্ডি বিচ্ছিন্ন করা কি ওয়াজিব?
উত্তর – ওয়াজিব নয়, কারণ কিসাস তো চলে শর্তসাপক্ষে শুধু জীবিতদের মাঝে।
প্রশ্ন ৪ – মৃতব্যক্তি অঙ্গদানের অসিয়ত করলে তা কি বাস্তবায়ন করা হবে?
উত্তর – পূর্বের ফতোয়ার কারণে তার অসিয়ত বাস্তবায়ন করা হবে না। যদিও সে অসিয়ত করে যায়, কারণ তার দেহের মালিক সে নিজে নয়।
প্রশ্ন ৫ – মৃতের সম্পদ থেকে প্রথমে কাফন ও সংশ্লিষ্ট বিষয় যেমন সুগন্ধি ইত্যাদির খরচ কি আলাদা করা হবে?
উত্তর – মৃতের ত্যাজ্য সম্পদ হতে সর্বপ্রথম কাফন দাফন যেমন লাশের গোসল দেয়া, কবর খনন করা ইত্যাদির খরচ বের করা হবে, অতপর বন্ধকের বিনিময়ে গৃহিত ঋণ পরিশোধ করা হবে, অতঃপর সাধারণ করজ পরিশোধ করা হবে, অতঃপর সম্পদের এক তৃতীয়াংশ হতে ওয়ারিস ব্যতীত অন্যদের জন্য কৃত অসিয়ত পূরণ করা হবে।
প্রশ্ন ৬ – কোন ব্যক্তির যদি ব্রেইন স্ট্রোক হয়, তাহলে তাকে তৎক্ষণাৎ মৃত বলা যাবে?উত্তর – না, তাকে মৃত বলা যাবে না, তাকে মৃত ঘোষণা করার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করবে না, বরং মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। অনেক সময় ডাক্তারগণ রুগির কলিজা ইত্যাদি কেটে নেয়ার জন্য এ বিষয়ে হাড়াহুড়ো করে, এবং মৃতকে নিয়ে যাই ইচ্ছা তাই করতে থাকে এগুলো সম্পুর্ণ না জায়েয।
প্রশ্ন ৭ – ডাক্তারগণ দাবি করেন যে, ব্রেইন স্ট্রোকের মানুষ কখনো জীবন ফিরে পায় না, কথাটি কতটুকু সত্য?
উত্তর – তাদের এ দাবি নির্ভরযোগ্য নয়। আমাদের নিকট এমন অনেক তথ্য আছে যে, ব্রেইন স্ট্রোককৃত মানুষ জীবন ফিরে পেয়েছে এবং দীর্ঘদিন জীবিত ছিল। মূল কথা হচ্ছে ব্রেইন স্ট্রোককৃত ব্যক্তিকে ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত বলা যাবে না, যতক্ষণ না তার মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
প্রশ্ন ৮ – মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকট সূরা ইয়াসিন ব্যতীত অন্য কোন সূরা পড়া জায়েয আছে কি?
উত্তর – যেহেতু হাদিস শরিফে সূরা ইয়াসিন পড়ার কথা এসেছে তাই ঐ সূরা পড়াই উত্তম, কিন্তু তার সাথে অন্য সূরা পড়লেও কোন সমস্যা নেই।
(তবে শাইখ বিন বায রহ. সউদী রেডিওর, ‘নূরুন আ’লাদ দারব’ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, বিশুদ্ধ মতানুযায়ী মূমূর্ষূ ব্যক্তির নিকট সূরা ইয়াসিন পাঠ করা সুন্নত নয়। কারণ, এ মর্মে হাদীসটি সনদগতভাবে দূর্বল। (-ওয়েব এডমিন))
প্রশ্ন ৯ – মৃত ব্যক্তিকে চুম্বন করা জায়েয আছে কি?
উত্তর – মৃত ব্যক্তিকে পুরুষ বা এমন মহিলা চুম্বন করতে পারবে যার সাথে বিয়ে বন্ধন চিরতরের জন্য হারাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এন্তেকাল হলে সাহাবি আবুবকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তার কপালে চুমু দিয়ে ছিলেন।
প্রশ্ন ১০ -মৃতকে রিফ্রিজারেটরে রেখে মৃত্যুর ছয়মাস পর জানাযা পড়া কেমন?
উত্তর – প্রয়োজনে ছয়মাস বা ততোধিক সময় দেরি করা যেতে পারে।
প্রশ্ন ১১ – হজে গমনকরী যে ব্যক্তির হজ নষ্ট হয়ে গেছে, তার মৃত্যু হলে বিধান কি?
উত্তর – তার সাথেও শুদ্ধ হজে গমনকারী ব্যক্তির ন্যায় আচরণ করা হবে। তাকে তার কাপড়েই সুগন্ধি ছাড়া মাথা ও মুখ খোলা রেখে কাফন দয়া হবে। সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত আছে যে, জনৈক হাজি বাহন হতে পড়ে মৃত্যুবরণ করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবিদেরকে বললেন,
«اغسلوه بماء وسدر وكفنوه في ثوبيه ولا تحنطوه ولا تخمروا وجهه ولا رأسه فإنه يبعث يوم القيامة ملبيا» (متفق عليه)
“তাকে কুলপাতা মিশ্রিত পানি দ্বারা গোসল দাও, এহরামের দু’কাপড়ে কাফন দাও এবং তার মাথা ও মুখ খোলা রাখ, কেননা সে কিয়ামতের দিন তালবিয়া পড়তে পড়তে উঠবে”। (বুখারি ও মুসলিম)
প্রশ্ন ১২ – রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঋণী ব্যক্তির উপর জানাযার নামাজ কেন পড়তেন না?
উত্তর – ইসলামের শুরুতে ঋণ গ্রহণে নিরুৎসাহী করা ও গৃহিত ঋণ দ্রুত পরিশোধের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ পন্থা অবলম্বন করেছিলেন। পরবর্তীতে তা রহিত হয়ে যায়, তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঋণমুক্ত, ঋণগ্রস্ত সকলের উপর জানাযা পড়তেন।
প্রশ্ন ১৩ – রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«وأنتم شهداء الله في أرضه»
“তোমরা আল্লাহর জমিনে তার সাক্ষী”। উল্লেখিত হাদিসটির ব্যাখ্যা কি?
উত্তর – এ হাদিসটি সে ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য যে তার ভাল-মন্দ সব কিছু মানুষের সামনে প্রকাশ করে দেয়, কাজেই মানুষ তার কর্মের উপর সাক্ষী হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাণী দ্বারা নিজ উম্মতদিগকে মন্দকাজ করা ও তা প্রকাশে বারণ করেছেন এবং ভাল কাজ করা ও তা প্রকাশের প্রতি উৎসাহিত করেছেন।
প্রশ্ন ১৪- জীবিতদের কোন আমল মৃতদের নিকট পৌঁছে কি?
উত্তর – যেসব আমল মৃতদের নিকট পৌঁছার কথা হাদিসে এসেছে সে সব আমল পৌঁছে যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,
«إذا مات ابن آدم انقطع عمله إلا من ثلاث : صدقة جارية أو علم ينتفع به أو ولد صالح يدعوله» (رواه مسلم)
“যখন আদম সন্তান মৃত্যুবরণ করে, তখন তার সকল আমল বন্ধ হয়ে যায়, শুধু তিনটি ব্যতীত: সদকায়ে জারিয়াহ অথবা মানুষের উপকার হয় এমন এলেম অথবা নেক সন্তান যে তার জন্য দো‘আ করে”। (মুসলিম) এ ছাড়া সাদকাহ, দোয়া, হজ, ওমরাহ ইত্যাদি মৃতের নিকট পৌঁছার কথা হাদিসে এসেছে। কিন্তু সালাত সিয়াম কোরআন তিলাওয়াতে তওয়াফ ইত্যাদি মৃতদের নিকট পৌঁছার কোন প্রমাণ নেই, তাই এগুলো পরিহার করা উচিৎ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,
«من عمل عملا ليس عليه أمرنا فهو رد» ( رواه مسلم)
“যে এমন কোন কাজ করল যা আমাদের আদর্শ মোতাবেক নয়, তা পরিত্যক্ত”। (মুসলিম)
প্রশ্ন ১৫ – মৃতরা জীবিতদের কতক আমল দ্বারা উপকৃত হবে আর কতক আমল দ্বারা হবে না, এর প্রমাণ কি?
উত্তর – এসব বিষয় ওহী নির্ভর, এখানে মানুষের ধারণা বা অনুমানের কোন অবকাশ নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد» (متفق عليه)
“আমাদের দ্বীনে যে এমন কিছু আবিষ্কার করল, যা তার অন্তর্ভুক্ত নয়, তা পরিত্যক্ত”। (বুখারি ও মুসলিম)
প্রশ্ন ১৬ – মৃত ব্যক্তিরা জীবিত নিকট আত্মীয়দের আমল সম্পর্কে অবগত হন কি?
উত্তর – আমার জানামতে শরি‘আতে এর কোন প্রমাণ নেই।
প্রশ্ন ১৭ – ধর্মযুদ্ধে নির্দিষ্ট কোন কাফেরকে গালি দেয়া যাবে কি?
উত্তর – যদি কোন কাফের ইসলামের বিরোধীতা বা ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করে, তাহলে তাকে গালি দেয়া শরিয়ত সম্মত। বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফেরদের একজামা’ত যেমন আবুজাহেল, ওতবা ইবন রাবিয়া, শায়বা ইবন রবিয়ার উপর অভিশাপ করেছেন।
প্রশ্ন ১৮ – বিপদের সময় শোকর করা কি ওয়াজিব?
উত্তর – বিপদের সময় সবর করা ওয়াজিব, কিন্তু তার উপর সন্তুষ্ট থাকা ও শোকর করা মুস্তাহাব। এখানে তিনটি স্তর রয়েছে, (ক) ধৈর্যধরণ, এটা ওয়াজিব। (খ) বিপদের উপর সন্তুষ্ট থাকা, এটা সুন্নত। (ঘ) বিপদের উপর শুকরিয়া আদায় করা, এটাই সর্বোত্তম।
প্রশ্ন ১৯ – অনেক মেডিকেল কলেজে দক্ষিণ এশিয়া হতে গবেষণার জন্য লাশ আনা হয় এবং পরীক্ষা করার জন্য লাশ কাটা-ছেড়া করা হয়, শরিয়ত দৃষ্টে এ কাজ কেমন?
উত্তর – লাশটি যদি এরূপ কাফের সম্প্রদায়ের হয় যাদের সাথে নিরাপত্তার কোন চুক্তি নেই তাহলে বৈধ, অন্যথায় নয়।
প্রশ্ন ২০ – সন্ধেহভাজন মৃত ব্যক্তির অঙ্গ বিচ্ছেদ করা কেমন?
উত্তর – শরিয়ত সম্মত কারণে করা যেতে পারে।
প্রশ্ন ২১ – জানাযা নিয়ে দ্রুতচলা কি সুন্নত?
উত্তর – জানাযা নিয়ে সাধ্যানুযায়ী দ্রুতচলা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«أسرعوا بالجنازة فإن تك صالحة فخير تقدمونها إليه وإن كان سوى ذلك فشر تضعونه عن رقابكم» (رواه البخاري)
“তোমরা জানাযা নিয়ে দ্রুতচল, যদি পূণ্যবান হয় তাহলে তোমরা তাকে ভাল পরিণতির দিকে দ্রুত পৌঁছে দিলে, আর যদি পাপী হয়, তাহলে একটি মন্দবস্তুকে তোমাদের কাঁধ থেকে দ্রুত সরালে। (বুখারি)
প্রশ্ন ২২ – জানাযায় দ্রুত করার অর্থ কি গোসল ও নামাজে দ্রুত করা?
উত্তর – এর অর্থ হচ্ছে চলার পথে দ্রুত চলা, কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিষয় হিসেবে গোসল, কাফন, দাফন ও নামাজ সব এর অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন ২৩ – উম্মে আতিয়া সূত্রে বর্ণিত হাদিসে রয়েছেঃ
«نهينا عن اتباع الجنائز»
“আমাদেরকে জানাযার সাথে যেতে নিষেধ করা হয়েছে”। এ হাদিসের ব্যাখ্যা কি?
উত্তর – নিষেধের উদ্দেশ্য হচ্ছে গোরস্থানে যাওয়া। জানাযা পড়তে নিষেধ করা হয়নি, জানাযা পুরুষদের জন্য যেমন বৈধ মহিলাদের জন্যও বৈধ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে মহিলারাও রাসূলের সাথে জানাযায় অংশ গ্রহণ করতেন।
প্রশ্ন ২৪ – জানাযার সাথে গমনকারীদের জন্য সুন্নত তরিকা কি?
উত্তর – জানাযার সাথে গমনকারীদের জন্য সুন্নত হচ্ছে পুরুষরা যতক্ষণ না কাঁধ থেকে লাশ জমিনে না রাখবে, কেউ বসবে না। আর প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে সুন্নত হচ্ছে যতক্ষণ না লাশ দাফন শেষ হয় অপেক্ষা করবে, যাতে সালাত ও দাফন উভয় আমলের পরিপূর্ণ নেকি লাভ করা যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«من تبع جنازة مسلم فكان معها حتى يصلى عليها و يفرغ من دفنها فإنه يرجع بقيراطين كل قيراط مثل جبل أحد» (رواه البخاري)
“যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের জানাযায় অংশ গ্রহণ করে, অতঃপর তার সাথেই থাকে যতক্ষণ না তার উপর সালাত আদায় করা হয় ও তার দাফন শেষ হয়, সে সে দু’কিরাত পূণ্য নিয়ে বাড়ি ফিরবে, প্রত্যেক কিরাত ওহুদ পাহাড়ের সমান”। (বুখারি)
প্রশ্ন ২৫ – মৃত ব্যক্তিকে কিভাবে কবরে রাখবে?
উত্তর – আব্দুল্লাহ ইবন জায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত হাদিস প্রমাণ করে যে, মৃত ব্যক্তিকে পায়ের দিক হতে প্রবেশ করিয়ে মাথার দিকে টেনে আনবে এবং কেবলামুখী করে ডান পাঁজরে শোয়াবে এবং নিম্নের দো‘আ পড়বেঃ
«بسم الله وعلى ملة رسولِ لله»
“আল্লাহর নামে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ মোতাবেক রাখছি”। (আবুদাউদ)
প্রশ্ন ২৬ – কাফেরের জানাযা দেখে দাঁড়ানো যাবে কি?
উত্তর – হ্যাঁ, কাফেরের জানাযা দেখেও দাঁড়ানো যাবে, কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
উত্তর – মৃত ব্যক্তিকে পুরুষ বা এমন মহিলা চুম্বন করতে পারবে যার সাথে বিয়ে বন্ধন চিরতরের জন্য হারাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এন্তেকাল হলে সাহাবি আবুবকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তার কপালে চুমু দিয়ে ছিলেন।
প্রশ্ন ১০ -মৃতকে রিফ্রিজারেটরে রেখে মৃত্যুর ছয়মাস পর জানাযা পড়া কেমন?
উত্তর – প্রয়োজনে ছয়মাস বা ততোধিক সময় দেরি করা যেতে পারে।
প্রশ্ন ১১ – হজে গমনকরী যে ব্যক্তির হজ নষ্ট হয়ে গেছে, তার মৃত্যু হলে বিধান কি?
উত্তর – তার সাথেও শুদ্ধ হজে গমনকারী ব্যক্তির ন্যায় আচরণ করা হবে। তাকে তার কাপড়েই সুগন্ধি ছাড়া মাথা ও মুখ খোলা রেখে কাফন দয়া হবে। সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত আছে যে, জনৈক হাজি বাহন হতে পড়ে মৃত্যুবরণ করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবিদেরকে বললেন,
«اغسلوه بماء وسدر وكفنوه في ثوبيه ولا تحنطوه ولا تخمروا وجهه ولا رأسه فإنه يبعث يوم القيامة ملبيا» (متفق عليه)
“তাকে কুলপাতা মিশ্রিত পানি দ্বারা গোসল দাও, এহরামের দু’কাপড়ে কাফন দাও এবং তার মাথা ও মুখ খোলা রাখ, কেননা সে কিয়ামতের দিন তালবিয়া পড়তে পড়তে উঠবে”। (বুখারি ও মুসলিম)
প্রশ্ন ১২ – রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঋণী ব্যক্তির উপর জানাযার নামাজ কেন পড়তেন না?
উত্তর – ইসলামের শুরুতে ঋণ গ্রহণে নিরুৎসাহী করা ও গৃহিত ঋণ দ্রুত পরিশোধের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ পন্থা অবলম্বন করেছিলেন। পরবর্তীতে তা রহিত হয়ে যায়, তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঋণমুক্ত, ঋণগ্রস্ত সকলের উপর জানাযা পড়তেন।
প্রশ্ন ১৩ – রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«وأنتم شهداء الله في أرضه»
“তোমরা আল্লাহর জমিনে তার সাক্ষী”। উল্লেখিত হাদিসটির ব্যাখ্যা কি?
উত্তর – এ হাদিসটি সে ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য যে তার ভাল-মন্দ সব কিছু মানুষের সামনে প্রকাশ করে দেয়, কাজেই মানুষ তার কর্মের উপর সাক্ষী হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাণী দ্বারা নিজ উম্মতদিগকে মন্দকাজ করা ও তা প্রকাশে বারণ করেছেন এবং ভাল কাজ করা ও তা প্রকাশের প্রতি উৎসাহিত করেছেন।
প্রশ্ন ১৪- জীবিতদের কোন আমল মৃতদের নিকট পৌঁছে কি?
উত্তর – যেসব আমল মৃতদের নিকট পৌঁছার কথা হাদিসে এসেছে সে সব আমল পৌঁছে যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,
«إذا مات ابن آدم انقطع عمله إلا من ثلاث : صدقة جارية أو علم ينتفع به أو ولد صالح يدعوله» (رواه مسلم)
“যখন আদম সন্তান মৃত্যুবরণ করে, তখন তার সকল আমল বন্ধ হয়ে যায়, শুধু তিনটি ব্যতীত: সদকায়ে জারিয়াহ অথবা মানুষের উপকার হয় এমন এলেম অথবা নেক সন্তান যে তার জন্য দো‘আ করে”। (মুসলিম) এ ছাড়া সাদকাহ, দোয়া, হজ, ওমরাহ ইত্যাদি মৃতের নিকট পৌঁছার কথা হাদিসে এসেছে। কিন্তু সালাত সিয়াম কোরআন তিলাওয়াতে তওয়াফ ইত্যাদি মৃতদের নিকট পৌঁছার কোন প্রমাণ নেই, তাই এগুলো পরিহার করা উচিৎ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,
«من عمل عملا ليس عليه أمرنا فهو رد» ( رواه مسلم)
“যে এমন কোন কাজ করল যা আমাদের আদর্শ মোতাবেক নয়, তা পরিত্যক্ত”। (মুসলিম)
প্রশ্ন ১৫ – মৃতরা জীবিতদের কতক আমল দ্বারা উপকৃত হবে আর কতক আমল দ্বারা হবে না, এর প্রমাণ কি?
উত্তর – এসব বিষয় ওহী নির্ভর, এখানে মানুষের ধারণা বা অনুমানের কোন অবকাশ নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد» (متفق عليه)
“আমাদের দ্বীনে যে এমন কিছু আবিষ্কার করল, যা তার অন্তর্ভুক্ত নয়, তা পরিত্যক্ত”। (বুখারি ও মুসলিম)
প্রশ্ন ১৬ – মৃত ব্যক্তিরা জীবিত নিকট আত্মীয়দের আমল সম্পর্কে অবগত হন কি?
উত্তর – আমার জানামতে শরি‘আতে এর কোন প্রমাণ নেই।
প্রশ্ন ১৭ – ধর্মযুদ্ধে নির্দিষ্ট কোন কাফেরকে গালি দেয়া যাবে কি?
উত্তর – যদি কোন কাফের ইসলামের বিরোধীতা বা ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করে, তাহলে তাকে গালি দেয়া শরিয়ত সম্মত। বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফেরদের একজামা’ত যেমন আবুজাহেল, ওতবা ইবন রাবিয়া, শায়বা ইবন রবিয়ার উপর অভিশাপ করেছেন।
প্রশ্ন ১৮ – বিপদের সময় শোকর করা কি ওয়াজিব?
উত্তর – বিপদের সময় সবর করা ওয়াজিব, কিন্তু তার উপর সন্তুষ্ট থাকা ও শোকর করা মুস্তাহাব। এখানে তিনটি স্তর রয়েছে, (ক) ধৈর্যধরণ, এটা ওয়াজিব। (খ) বিপদের উপর সন্তুষ্ট থাকা, এটা সুন্নত। (ঘ) বিপদের উপর শুকরিয়া আদায় করা, এটাই সর্বোত্তম।
প্রশ্ন ১৯ – অনেক মেডিকেল কলেজে দক্ষিণ এশিয়া হতে গবেষণার জন্য লাশ আনা হয় এবং পরীক্ষা করার জন্য লাশ কাটা-ছেড়া করা হয়, শরিয়ত দৃষ্টে এ কাজ কেমন?
উত্তর – লাশটি যদি এরূপ কাফের সম্প্রদায়ের হয় যাদের সাথে নিরাপত্তার কোন চুক্তি নেই তাহলে বৈধ, অন্যথায় নয়।
প্রশ্ন ২০ – সন্ধেহভাজন মৃত ব্যক্তির অঙ্গ বিচ্ছেদ করা কেমন?
উত্তর – শরিয়ত সম্মত কারণে করা যেতে পারে।
প্রশ্ন ২১ – জানাযা নিয়ে দ্রুতচলা কি সুন্নত?
উত্তর – জানাযা নিয়ে সাধ্যানুযায়ী দ্রুতচলা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«أسرعوا بالجنازة فإن تك صالحة فخير تقدمونها إليه وإن كان سوى ذلك فشر تضعونه عن رقابكم» (رواه البخاري)
“তোমরা জানাযা নিয়ে দ্রুতচল, যদি পূণ্যবান হয় তাহলে তোমরা তাকে ভাল পরিণতির দিকে দ্রুত পৌঁছে দিলে, আর যদি পাপী হয়, তাহলে একটি মন্দবস্তুকে তোমাদের কাঁধ থেকে দ্রুত সরালে। (বুখারি)
প্রশ্ন ২২ – জানাযায় দ্রুত করার অর্থ কি গোসল ও নামাজে দ্রুত করা?
উত্তর – এর অর্থ হচ্ছে চলার পথে দ্রুত চলা, কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিষয় হিসেবে গোসল, কাফন, দাফন ও নামাজ সব এর অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন ২৩ – উম্মে আতিয়া সূত্রে বর্ণিত হাদিসে রয়েছেঃ
«نهينا عن اتباع الجنائز»
“আমাদেরকে জানাযার সাথে যেতে নিষেধ করা হয়েছে”। এ হাদিসের ব্যাখ্যা কি?
উত্তর – নিষেধের উদ্দেশ্য হচ্ছে গোরস্থানে যাওয়া। জানাযা পড়তে নিষেধ করা হয়নি, জানাযা পুরুষদের জন্য যেমন বৈধ মহিলাদের জন্যও বৈধ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে মহিলারাও রাসূলের সাথে জানাযায় অংশ গ্রহণ করতেন।
প্রশ্ন ২৪ – জানাযার সাথে গমনকারীদের জন্য সুন্নত তরিকা কি?
উত্তর – জানাযার সাথে গমনকারীদের জন্য সুন্নত হচ্ছে পুরুষরা যতক্ষণ না কাঁধ থেকে লাশ জমিনে না রাখবে, কেউ বসবে না। আর প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে সুন্নত হচ্ছে যতক্ষণ না লাশ দাফন শেষ হয় অপেক্ষা করবে, যাতে সালাত ও দাফন উভয় আমলের পরিপূর্ণ নেকি লাভ করা যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«من تبع جنازة مسلم فكان معها حتى يصلى عليها و يفرغ من دفنها فإنه يرجع بقيراطين كل قيراط مثل جبل أحد» (رواه البخاري)
“যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের জানাযায় অংশ গ্রহণ করে, অতঃপর তার সাথেই থাকে যতক্ষণ না তার উপর সালাত আদায় করা হয় ও তার দাফন শেষ হয়, সে সে দু’কিরাত পূণ্য নিয়ে বাড়ি ফিরবে, প্রত্যেক কিরাত ওহুদ পাহাড়ের সমান”। (বুখারি)
প্রশ্ন ২৫ – মৃত ব্যক্তিকে কিভাবে কবরে রাখবে?
উত্তর – আব্দুল্লাহ ইবন জায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত হাদিস প্রমাণ করে যে, মৃত ব্যক্তিকে পায়ের দিক হতে প্রবেশ করিয়ে মাথার দিকে টেনে আনবে এবং কেবলামুখী করে ডান পাঁজরে শোয়াবে এবং নিম্নের দো‘আ পড়বেঃ
«بسم الله وعلى ملة رسولِ لله»
“আল্লাহর নামে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ মোতাবেক রাখছি”। (আবুদাউদ)
প্রশ্ন ২৬ – কাফেরের জানাযা দেখে দাঁড়ানো যাবে কি?
উত্তর – হ্যাঁ, কাফেরের জানাযা দেখেও দাঁড়ানো যাবে, কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
إذا رأيتم الجنازة فقوموا » وجاء في بعض الروايات: قالوا : يارسول الله إنها جنازة يهودي فقال : « أليست نفسا» وفي لفظ « إنما قمنا للملائكة » وفي لفظ « إن للموت لفزعا -رواه أحمد
“যখন তোমরা জানাযা দেখ, তখন তোমরা দাঁড়িয়ে যাও। অন্য এক বর্ণনায় আছে, সাহাবগণ বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল! এটাতো এক ইয়াহূদীর জানাযা”। তিনি বললেনঃ “এটা কি প্রাণী নয়?” অন্য বর্ণনায় আছে যে, “আমরা তো ফেরেশতাদের সম্মানার্থে দাঁড়িয়েছি”। অন্য আরেকটি বর্ণনায় আছে যে, “মৃত্যুর রয়েছে বিভীষিকা রয়েছে”। (আহমদ)
প্রশ্ন ২৭ – কোন মুসলিম মসজিদে অবস্থান করছেন, এমতাবস্থায় কোন জানাযা যেতে দেখলে দাঁড়াতে হবে কি?
উত্তর – হাদিসের বাহ্যিক দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে যে এমতাবস্থায়ও দাঁড়ানো মুস্তাহাব। না দাঁড়ালেও সমস্যা নেই কারণ এটা সুন্নত বা ওয়াজিব নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একসময় জানাযা দেখে দাঁড়িয়ে ছিলেন আবার অন্য সময় দাঁড়াননি।
প্রশ্ন ২৭ – কোন মুসলিম মসজিদে অবস্থান করছেন, এমতাবস্থায় কোন জানাযা যেতে দেখলে দাঁড়াতে হবে কি?
উত্তর – হাদিসের বাহ্যিক দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে যে এমতাবস্থায়ও দাঁড়ানো মুস্তাহাব। না দাঁড়ালেও সমস্যা নেই কারণ এটা সুন্নত বা ওয়াজিব নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একসময় জানাযা দেখে দাঁড়িয়ে ছিলেন আবার অন্য সময় দাঁড়াননি।
উৎস: জানাযার বিধান
শায়খ আব্দুল আযীয ইব্ন আব্দুল্লাহ ইব্ন বায রাহিমাহুল্লাহ
অনুবাদ : শিহাবউদ্দিন হোসাইন
সম্পাদনা : সানাউল্লাহ নজির আহমদ
ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
من أحكام الجنائز
« باللغة البنغالية »
« باللغة البنغالية »
الشيخ عبد العزيز بن عبد الله بن باز رحمه الله
ترجمة: شهاب الدين حسين
مراجعة: ثناء الله نذير أحمد
د/ أبو بكر محمد زكريا
د/ أبو بكر محمد زكريا
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন